সাতটি তারার তিমির (জীবনানন্দ দাশ)

70.00

Hardback ISBN- 9878194263555
Pages 78

follow Us

 এই পরিমার্জিত সংস্করণে এই সংকলনের এই কবিতার সংখ্যা ও বিন্যাস অপরিবর্তিত রইল। কবি ও কবিতাকে ভালো করে বোঝার জন্য বলা দরকার কবিতাগুলির সময়কালীন তাৎপর্য্য। এই সংকলনের অধিকাংশ কবিতা লেখা ১৯৩৪ থেকে ‘৪০-এর দশকের প্রথম দিকে, যখন জীবনানন্দ বরিশালে শিক্ষকতা করেছেন। নানা চাঞ্চল্যকর বিশ্বজোড়া রাজনৈতিক ঘটনার কথা কবিতার মধ্যে স্থান পেয়েছে। ‘সৌরকরোজ্জ্বল’ সম্পূর্ন কবিতাটি আন্তর্জাতিক কম্যুনিস্ট আন্দোলনের বিষয়ে ট্রটস্কী ও স্ট্যালিনের সময়ের কথা। “সৃষ্টির তীরে” কবিতায় উল্লেখ আছে হিটলার অস্ট্রিয় দখল করে কুইসলিংকে ক্ষমতায় আনেন। “ভাষিত” ও “লোকসামান্য” কবিতায় আছে চীন-জাপান যুদ্ধের কথা। “রিস্টওয়াচ” কবিতায় যুদ্ধক্ষেত্রে সদ্যমৃত সৈনিকদের চলমান হাতঘড়ির কথা বলা হয়েছে। “রাত্রির কোরাস” ও “সূর্যতামসী” কবিতা বিশ্বগ্রাসী দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ নিয়ে। “রাত্রির কোরাস” কবিতায় (কামান ও বোমার) ‘সপ্লিন্টারের অনন্ত নক্ষত্র’-এর যে উল্লেখ আছে, বইয়ের নাম ‘সাতটি তারার তিমির’ খুব সম্ভবতঃ সেই নক্ষত্রেরই উল্লেখ করেছে।

 

জীবনানন্দ দাশ [১৮৯৮-১৯৫৪]

তাঁর পিতা সত্যানন্দ শিক্ষক ছিলেন, তাঁর বিয়ে হয় কুসুমকুমারীর সঙ্গে, স্কুলের ছাত্রী থাকতেই যাঁর কবিতা প্রকাশ হতো পত্রিকায় । জীবনানন্দ কলকাতায় এম.এ. পাশ করে সিটি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন । ছাত্রজীবনেই তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, সেগুলি গ্রন্থিত হয় তাঁর প্রথম বই ‘ঝরা পালক’এ । সিটি কলেজ আর্থিক দুরাবস্থায় পড়লে জীবনানন্দ তাঁর চাকরি হারান, সেই সময়ের মানসিক নৈরাশ্যের মধ্যে এক নিজস্ব অনবদ্য স্টাইল গড়ে তুলে তিনি লেখেন ‘ধূসর পান্ডুলিপি’র কবিতাগুলি । ১৯৩০এ তাঁর বিয়ে হয় লাবণ্যর সঙ্গে । ১৯৩২এ কয়েক সপ্তাহের জন্য বরিশালে গিয়ে প্রকৃতির প্রেমে বিভোর হয়ে লিখে ফেলেন এক খাতা ভর্তি কবিতা—যা পরে গ্রন্থিত হয় ‘রূপসী বাংলা’ নামে । ১৯৩৫এ বরিশালের বি.এম. কলেজে শিক্ষকের কাজ পেয়ে তিনি বরিশালে বাস করেন ১৯৪৬ অবধি—এই সময় তিনি প্রচুর কবিতা, গল্প ও উপন্যাস লেখেন, যদিও তাঁর কোনও গদ্য লেখাই তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয়নি । তিনি ১৯৪৬এ চলে আসেন কলকাতায়, আবার পড়েন কর্মহীনতার সংকটে, যদিও তাঁর লেখালেখি অব্যহত থাকে। ১৯৫৩তে হাওড়া গার্লস কলেজে কাজ পাবার পর তাঁর সমস্যা কিছুটা লাঘব হয় । ১৯৫৪ সালের অক্টোবর মাসে এক ট্রাম দুর্ঘটনাতে গুরুতরভাবে আহত হয়ে ২২শে অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয় ।